এম জিয়াবুল হক, চকরিয়া :
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চাঞ্চল্যকর কিশোর ফুটবলার সেফায়েত হাবিব হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ও মামলার এজাহারনামীয় ১নং আসামি তারিকুল ইসলাম মিশুক অবশেষে ঘটনার সাতমাস পর গ্রেফতার হয়েছে।
রোববার (১১ ফেব্রুযারী) বিকাল তিনটার দিকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানাধীন মদনপুর এ কে মটরস নামক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে র্যাব-১১ এর সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৫ কক্সবাজার ক্যাম্পের একটি আভিধানিক টিম।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৫ জুলাই বিকালে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বেতুয়াবাজারস্থ অনুশীলন একাডেমীর পশ্চিম পাশে এম. আলী সেন্টার নামক মার্কেটের সামনে বখাটেন ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন কিশোর ফুটবলার মোহাম্মদ সেফায়েত হাবিব (২২)।
পরে তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে মারা যান হাবিব। নিহত হাবিব চকরিয়া উপজেলার পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রবাসী শাহাব উদ্দিনের ছেলে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, ভিকটিম সেফায়ত হাবিব বেতুয়াবাজারস্থ স্থানীয় একটি ফার্নিচারের দোকানে কাঠমিস্ত্রির কাজ করতো। মারা যাবার পূর্বের রাতে আসামি মিশুক ও সহপাঠী আরাফাতের সাথে একটি মোবাইল চুরির ঘটনাকে নিয়ে ভিকটিম হাবিব এর বাগবিতান্ড হয়।
পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে বিষয়টি মীমাংসা করে দিলে দুই পক্ষেই বাড়িতে চলে যায়।
কিন্তু পরের দিন বিকাল বেলায় আসামি মিশুক সহপাঠী আরাফাতের মাধ্যমে ভিকটিম সেফায়েত হাবিবকে একটি নির্জন এলাকায় ডেকে নিয়ে যায়।
ভিকটিম সেখানে পৌঁছা মাত্রই ১নং আসামি মিশুক ভিকটিম হাবিবকে ছুরিকাঘাত করে। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সেফায়েত হাবিব মৃত্যুবরণ করে।
এ ঘটনায় ভিকটিম সেফায়েত হাবিবের মাতা বাদী হয়ে ২৭ জুলাই তারিখে চকরিয়া থানায় দুই জনের নাম উল্লেখপূর্বক একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। (যার মামলা নং ৫৭/৩৬৩ ও ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০।)
র্যাব-১৫, কক্সবাজার ক্যাম্পের অধিনায়ক গতকাল সোমবার পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের পর থেকেই আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান তৎপরতা শুরু করে বিভিন্ন তথ্যাদি সংগ্রহ করে আসছেন।
এরই অংশ হিসেবে গোপন সূত্রে র্যাব-১৫ এর একটি টিম নিশ্চিত হন, হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ও মামলার এজাহারনামীয় ১নং আসামী ঘাতক মিশুক নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানাধীন মদনপুরে অবস্থিত এ কে মোটরসে মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করছেন।
ওই তথ্যের ভিত্তিতে প্রায় সাতমাস পর গত রোববার (১১ ফেব্রুয়ারী বিকাল তিনটার দিকে র্যাব-১১ এর সহযোগিতায় র্যাব-১৫ কক্সবাজার ক্যাম্পের একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানাধীন মদনপুরস্থ এ কে মোটরস থেকে মূল হত্যাকারী তারিকুল ইসলাম মিশুককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছেন।
গ্রেফতারকৃত মিশুক চকরিয়া উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের ৯নং ওর্যাড স্কুলপাড়া এলাকার আবু বক্কর এর ছেলে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, সোমবার সকালে গ্রেফতারকৃত আসামী মিশুককে থানায় হস্তান্তর করেছেন র্যাব সদস্যরা। তাঁকে গতকাল কিশোর ফুটবলার হাবিব খুনের মামলায় আসামি হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-